মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৮:২৫ অপরাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী থেকে তুলে নিয়ে তরুণীকে (১৯) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রাতভর মারধর ও নির্যাতন করেছেন সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পী (২৯) ও তার তিন সহযোগী। ভুক্তভোগী তরুণী একজন শিক্ষানবিশ নার্স।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) রাতে অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বাপ্পীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে রাত ৮টার দিকে সাবেক স্বামীসহ ৪ জন ও সিএনজি চালকসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে ভুক্তভোগী নিজেই সুধারাম মডেল থানায় মামলা করেন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এখন এক আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই তরুণী।
গত বুধবার সন্ধ্যায় ওই তরুণীর সাবেক স্বামীসহ তিনজন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে তুলে নিয়ে এমন নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
মামলার আসামিরা হলেন, ওই তরুণীর সাবেক স্বামী কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামের মো. ইউসুফের ছেলে ইসমাইল হোসেন বাপ্পী, তার সহযোগী একই গ্রামের রহিম (২৪), আরমান (২৫) ও সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সাগর (৩৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নিজ কর্মস্থল জেলা শহর মাইজদীর গ্রীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাইজদীর হরিনারায়ণপুরের বাসায় ফিরছিলেন শিক্ষানবিশ ওই নার্স। মাইজদী পেট্রোল পাম্পের সামনে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি।
সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সামনে এসে দাঁড়ালে তিনি গন্তব্যে যাওয়ার জন্য উঠে পড়েন। পরে ওই গাড়িটি একটু সামনে গেলে দুজন যাত্রী সামনের সিটে ওঠেন। আর একটু সামনে গেলে তার সাবেক স্বামী ও আরও একজন ভিকটিমের দু’পাশে উঠে বসেন।
সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠার পর থেকেই তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন সাবেক স্বামী বাপ্পী ও তার সহযোগী রহিম (২৪)। মুখ চেপে ধরে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে নিয়ে যান তাকে।
সিএনজি থেকে নামানোর পর বুঝতে পারেন এটি তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পির বাড়ি। ফাঁকা বাড়িতে সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ি কেউই নেই। সিএনজিতে মারতে মারতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে।
ঘরে ঢুকিয়েও বেদম মারধর করেন তার সাবেক স্বামী। রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সিগারেটের আগুনে মুখমণ্ডলে ছ্যাঁকা দেন। এ সময় অপর দু’জনসহ ধর্ষণের চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন।
ভোরের দিকে অভিযুক্তরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়লে এ সুযোগে পালিয়ে মাইজদীর চাচার বাসায় এসে আশ্রয় নেন ওই তরুণী। পরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। রাতে চাচার সহায়তায় থানায় মামলা করেন।
স্বজনরা জানান, ছোটবেলায় বাবাকে হারান ভিকটিম। নতুন করে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন মা। অভিভাবকশূন্য হয়ে নানির কাছেই বড় হন তিনি। নবগ্রামে নানির কাছে থাকা অবস্থায় বখাটে ইসমাইল হোসেন বাপ্পির নজরে পড়েন তিনি। বাপ্পি অনেকটা জোরপূর্বক ভাবেই অপ্রাপ্ত বয়সে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন। কিন্তু বিয়ে করেও বাঁচতে পারেননি তিনি। প্রায় সময়ই নির্যাতনের শিকার হতে হত তাকে। মারধর করতেন শাশুড়ি, ননদ ও দেবর। দু’মাস আগে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।
সুধারাম থানার ওসি নবীর হোসেন জানান, রাতে ভুক্তভোগীর মামলা নেয়া হয়েছে। মামলার এক নম্বর আসামি ইসমাইল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এসএম